দেশের বাজারে বেশ কিছুদিন ধরে মাইক্রোম্যাক্স ব্যাবসা করে আসছে স্বল্পমূল্যের চাইনিজ মোবাইল ফোন দিয়ে। কিন্তু সিম্ফনি এবং ওয়ালটনের পথ অনুসরণ করে তারা এবার দেশের বাজারে আনল ৫" স্ক্রিনের বেশ ভাল মানের একটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন যার প্রডাক্ট নাম হলো ‘ক্যানভাস ২’। পাশের দেশ ভারতে অনেক দিন ধরেই ব্যাবসা করে আসছে মাইক্রোম্যাক্স। সেখানে তাদের স্মার্টফোনের ভান্ডারও বেশ সমৃদ্ধ। সেই ভান্ডারের শেষ অস্ত্রটি হল "এ১১০"। কিন্তু বাংলাদেশের স্মার্টফোনের বাজারে শুরুতেই বেশ ভাল মানের একটি স্মার্টফোন এনে একটু চমকই দেখাল তারা। এই চমকের মূল কারন ফোনটির ৫" আকারের আইপিএস স্ক্রিন এবং তুলনামূলক স্বল্প মূল্য।
যদিও স্মার্টফোনটি দেশের বাজারে এনে সংবাদ সম্মেলন করার প্রায় ২ মাস পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে তারা এই ফোনের বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আবার বিভিন্ন গ্রাহকের দেওয়া তথ্য অনুসারে বেশ আগে থেকেই বিভিন্ন মোবাইল ফোনের দোকানে পাওয়া যাচ্ছিল স্মার্টফোনটি। বর্তমানে তাদের ওয়াবসাইটের বাংলাদেশ ভার্সনে ঢোকা যাচ্ছে না। কোন রেসপন্সও করছে না ফেসবুক পেজে। সব দিক দিয়ে তাদের বেশ অগোছালো শুরুই হল বাংলাদেশের স্মার্টফোনের বাজারে।
ক্যানভাস ২ ফোনটি তাদের আরেকটি স্মার্টফোন “ক্যানভাস এ১০০” এর উন্নত সংস্করণ। যেহেতু ২য় সংস্করণ সেহেতু বেশ ভালো স্পেসিফিকেশন দিয়েই তারা আনতে চেয়েছে তাদের সর্বশেষ হাতিয়ারটি।
ক্যানভাস ২ স্মার্টফোনটিতে আছে ৫" (১২.৭ সেমি) এফডব্লিউভিজিএ (Full Wide Video Graphics Array) আইপিএস স্ক্রীন, যার স্ক্রীন রেজুলেশন হল ৪৮০*৮৫৪ পিক্সেল। ফোনটির প্রসেসর ১ গিগাহার্টজ ডুয়েল কোর যা অবশ্যই ভাল খবর। অ্যান্ড্রয়েড ৪.০.৪ আইসক্রিম স্যান্ডউইচ ব্যাবহার করা হয়েছে ফোনটিতে। কিন্তু এই ফোনের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা বলা যায় এর মেমরী; মাত্র ৫১২ মেগাবাইট। এই ফোনটির ক্ষেত্রে মেমরীকে আসলে বেমানানই লাগছে কারন বড় স্ক্রীন এবং ভাল মানের প্রসেসরে সকলেই চাইবে ভাল গ্রাফিক্সের গেম খেলতে যেখানে বাধসাধবে মেমরী। যদিও মূল্যের কথাও বিবেচনা করতে হবে একইসাথে। আর ফোনটিতে ইন্টারনাল মেমোরি আছে ৪গিগাবাইট যার তিন চতুর্থাংশ পরিমান ব্যাবহার করতে পারবেন আপনি। সামনে এবং পিছনে উভয়দিকেই ক্যামেরা আছে ফোনটিতে। পিছনে ৮ মেগাপিক্সেল অটোফোকাস এবং সামনে ০.৩ মেগাপিক্সেল। বাংলাদেশের মানুষের বহু আকাঙ্ক্ষিত থ্রি-জি ও আছে ফোনটিতে। সাথে জিপিএস, ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, প্রক্সিমিটি সেন্সর, মোশন সেন্সর এবং গ্রাভিটি সেন্সরতো থাকছেই। স্মার্টফোনটিতে ব্যাটারি আছে ২০০০ এমএএইচ আপাত দৃষ্টিতে যা অনেক বেশি। কিন্তু ৫ ইঞ্চি স্ক্রিনের জ্বালানী যোগানদিতে এটি খুব বেশি যথেষ্ট নাও হতে পারে।
এতকিছু সমৃদ্ধ স্মার্টফোনটির মূল্য নির্ধারন করা হয়েছে মাত্র ১৪,৯৯৯ টাকা। যাকে মোটেও বেশি বলা যাচ্ছে না, কারন ভারতেই ফোনটি বিক্রি হচ্ছে ১০,০০০ রুপিতে। আবার একেবারে কমও বলা যাচ্ছে না কারন দেশের বাজারে বেশ কম মূল্যেই ভাল মানের স্মার্টফোন আসছে দিনে দিনে।
তবে রুট প্রিয় গ্রাহকেরা একটু মন খারাপই করবেন কারন বিভিন্ন রিভিউ ঘেটে দেখা গেছে ফোনটি রুট করা যায় না। এর জন্য বেশ সমালোচনাও সহ্য করতে হচ্ছে তাদের।
সিম্ফনি ডব্লিউ৬০ এর রিভিউতেই বলেছি নিজের প্রথম স্মার্টফোনটি এই নতুন বছরে কিনতে চাইলে সবচেয়ে ভাল সিদ্ধান্ত হবে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করা। কারন তখন তুলনা করার মত বেশ কিছু স্মার্টফোন পাবেন আপনি একই রেঞ্জের মধ্যে। যাদের মধ্যে রয়েছে ওয়ালটন প্রিমো জি১ এবং আর১ নামের দুটি বেশ ভাল স্পেসিফিকেশনের ফোন।
0 মন্তব্যসমূহ
No Spam Link is Allowed