নতুন অপারেটিং সিস্টেমে ‘উইন্ডোজ ১১’ থাকছে বেশ কিছু নতুন ফিচার। তার চেয়েও বড় কথা বেশ কিছু পুরনো ফিচার বাদ পড়তে যাচ্ছে, যা গত ২০ বছরেও মাইক্রোসফট পুরোপুরি বাতিল করেনি। নতুনের পথে এগোতে হলে পুরনোকে ঝেড়ে ফেলতে হয়, সেটা ম্যাকওএসের মাধ্যমে অ্যাপল প্রমাণ করার পর মাইক্রোসফটও হাঁটছে সে পথেই।
- যেভাবে পাওয়া যাবে উইন্ডোজ ১১
- উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করতে যা লাগবে
যদিও মাইক্রোসফটের ওয়েবসাইট অনুযায়ী অন্তত ১ গিগাহার্জ গতির ডুয়াল কোর ৬৪ বিট প্রসেসর, ৪ গিগাবাইট র্যাম, ডাইরেক্ট এক্স ১২ সমর্থিত গ্রাফিকস এবং ৭২০ পিক্সেল রেজল্যুশনের ডিসপ্লে থাকলেই উইন্ডোজ ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু বাস্তবে চিত্রটি কিন্তু ভিন্ন। বর্তমানে মাইক্রোসফটের পেজ অনুযায়ী শুধু অষ্টম প্রজন্মের ইন্টেল কোর ও দ্বিতীয় প্রজন্মের এএমডি রাইজেন সিরিজের প্রসেসরসমৃদ্ধ পিসিতেই চলবে ‘উইন্ডোজ ১১’। অর্থাৎ মাইক্রোসফটের বর্তমান ফ্ল্যাগশিপ সারফেস স্টুডিও ২-তেও চলবে না ‘উইন্ডোজ ১১’। পরবর্তী সময়ে এ তালিকায় পুরনো প্রসেসর যুক্ত করার সম্ভাবনাও রয়েছে। এর সঙ্গে আছে আরো একটি চাহিদা—পিসিতে পুরনো ঘরানার বায়োস থাকলেও চলবে না, থাকতে হবে ইউইএফআই (ইউনিফাইড এক্সটেনসিবল ফার্মওয়্যার ইন্টারফেস)। অবশ্য প্রথম প্রজন্মের ইন্টেল কোর সিরিজের সময় থেকেই ইউইএফআই ব্যবহার হয়ে আসছে বায়োসের বদলে। সঙ্গে অবশ্যই থাকতে হবে ‘ট্রাস্টেড প্ল্যাটফর্ম মডিউল’ বা ‘টিপিএম ২.০’ এবং চালু করতে হবে সিকিউর বুট। সে জন্য অবশ্যই পিসির হার্ড ড্রাইভ বা এসএসডি হতে হবে জিপিটি পার্টিশন, পুরনো এমবিআর নয়। আর এসব চাহিদা একটা দিকেই নির্দেশ করে আর সেটি হলো মাইক্রোসফট চাইছে না আর পুরনো হার্ডওয়্যারের জন্য কাজ করুক এই নতুন উইন্ডোজ। এই নির্দেশনা অনুযায়ী হয়তো ভবিষ্যতে ষষ্ঠ প্রজন্মের ইন্টেল কোর এবং প্রথম প্রজন্মের রাইজেন প্রসেসরসমৃদ্ধ পিসি ‘উইন্ডোজ ১১’ পেতেও পারে; কিন্তু কোর ২ ডুয়ো থেকে শুরু করে পঞ্চম প্রজন্মের কোর সিরিজ বা এএমডির পুরনো এফএক্স সিরিজ পুরোপুরি বাদ যাচ্ছে।
- নতুন ইন্টারফেস
ম্যাকের মতো উইন্ডোজেও যুক্ত হচ্ছে স্ন্যাপ লে-আউট। বর্তমানে প্রগ্রাম উইন্ডোজ শুধু ম্যাক্সিমাইজ আর মিনিমাইজ করা যায়, এবার থেকে বাটনটি চেপে ডিসপ্লের এক পাশে বা এক কোনায়ও সেটি পাঠানো যাবে। একাধিক অ্যাপ একসঙ্গে ডিসপ্লেতে নিজ থেকেই সাজানোর অপশনও যুক্ত করা হয়েছে।
স্ন্যাপ লে-আউট নিজের মতো করে সাজানো যাবে একাধিক মনিটরের জন্যও, আর মূল মনিটর থেকে টেনে অন্য মনিটরে অ্যাপ নিয়ে যেতে হবে না, অ্যাপকে একটি মনিটরে বেঁধে দেওয়া যাবে। মনিটর সরিয়ে ফেললেও সেটি সংরক্ষণ করা হবে, পরে আবার যুক্ত করলে নতুন মনিটরে চলে যাবে অ্যাপ।
এ ছাড়া ইন্টারফেসের ডিজাইনে ব্যবহার করা হয়েছে নতুন রং, বেশ কিছু জায়গায় ইন্টারফেস ঢেলে সাজানো হয়েছে। ‘উইন্ডোজ ১০’-এর সঙ্গে মিল নেই বলা যাবে না, বরং একে ‘উইন্ডোজ ১০’-এর বড় আপগ্রেড বলা যেতে পারে।
- মাইক্রোসফট টিমস ও স্কাইপের পতন
মেইল অ্যাপ থেকে সরাসরি করা যাবে ভিডিও কল, টিমসের মেসেজ থেকে সরাসরি ক্যালেন্ডারে চলে যাবে মিটিং বা ডেডলাইনের সময়সূচি। ডেস্কটপ বা টাস্কবার থেকেই এক ক্লিকে করা যাবে ভিডিও কনফারেন্স। এরূপ আরো নানা ধরনের সুবিধাই থাকবে উইন্ডোজের সঙ্গে, যাতে ব্যবহারকারীরা কাজ করতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যে।
আর এর মাধ্যমে অবশ্য বাদ পড়ছে স্কাইপ। উইন্ডোজের সঙ্গে স্কাইপ আর দেওয়া থাকবে না, চাইলে অবশ্য ইনস্টল করে নেওয়া যাবে। কিন্তু মাইক্রোসফট যে ধীরে ধীরে স্কাইপকে বাদ দিয়ে টিমসকেই প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে, তারই প্রথম বড় ধাপ এটিকে বলা যায়।
- চলবে অ্যানড্রয়েড অ্যাপও
অ্যাপ সাইডলোডিং ফিচারটি কতটুকু সহজ বা কঠিন হবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি, তবে একেবারে সহজ হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই ধারণা করা হচ্ছে। অ্যানড্রয়েড গেম পিসিতে ঠিক কতটা ভালোভাবে চলবে সেটা নিয়েও রয়ে গেছে সন্দেহ, কেননা বেশির ভাগ গেমেই দেওয়া হয়ে থাকে টাচ কন্ট্রোল আর বেশির ভাগ পিসিতেই টাচ স্ক্রিন দেখা যায় না।
- অবশেষে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের মৃত্যু
ওয়েব ডিজাইনাররা দীর্ঘদিন ধরেই ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার সমর্থিত পেজ বানাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, পুরনো এই ব্রাউজার সমর্থন না করলে ওয়েবসাইটের ডিজাইন সম্পূর্ণ হচ্ছিল না। ‘উইন্ডোজ ১১’-এর মাধ্যমে এই সমস্যার অবসান হতে যাচ্ছে।
- গেমিং
আজকাল প্রচুর ডেস্কটপ মনিটর ও ল্যাপটপে এইচডিআর সমর্থিত ডিসপ্লে ব্যবহার হচ্ছে, অথচ বেশির ভাগ পুরনো গেমেই সেটার সমর্থন নেই। ব্যবহারকারীরা চাইলে ‘উইন্ডোজ ১১’-তে থাকা অটো এইচডিআর ব্যবহার করে সেসব গেমে এইচডিআরের স্বাদ নিতে পারবেন।
- নতুন ধরনের পিসির জন্য প্রস্তুতি
সূত্রঃ কালের কন্ঠ
See More:
0 মন্তব্যসমূহ
No Spam Link is Allowed